দেশের মানুষগুলো এতো সময় পায় কোথায়, ভেবে অস্থির হই।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে, ওভারব্রিজে জড়ো হয়ে, ফ্লাইওভারে পায়চারি করে,
রাস্তার কোনায় বসে তারা কী কথা বলে?
হতাশ হয়ে ভাবি, তারা সেখানে কী করে?
পৃথিবীর মানুষ যখন পিঁপড়ের মতো ব্যস্ত হয়ে কাজ করছে
জীবিকার সন্ধান করছে, বিন্দু থেকে সিন্ধু গড়ছে
গড়ে তুলছে শিল্প নগর আর বাসস্থান
তখন হতাশ হয়ে ভাবি আমাদের মানুষগুলো শুধু বসে বসে কী কথা বলে?
দিনমান চায়ের স্টলে বসে থেকে তারা কী কথা বলে?
ভিনদেশী অতিথিরা আশ্চর্য হয়ে আমাদের দেখে,
এদেশের মানুষগুলো শুধু কথা বলার এত সময় পায় কোথায়?
তারা খায় কী?
কোরীয় কিংবা মালে যেসব জাতির জন্ম আমাদেরই কালে
যারা আমাদেরকে ভাবতো দুগ্ধমধুপ্রবাহী দেশ বলে
যারা আমাদের সমৃদ্ধিতে ঈর্ষা করতো, আজ তারা আমাদের কর্মদাতা!
গড়ে ওঠার সংগ্রামে তাদের সাপ্তাহিক ছুটিটুকুও ছিলো না।
কিন্তু ছুটি পেলেই যেন বাঁচি, তিনপায়েতে নাচি
চাকরির আগে ছুটি ক’দিন, কখন অফিস শেষ হয়, নিয়ে ভাবি।
বার্ষিক সাপ্তাহিক পার্বিক ঐচ্ছিক অর্জিত বর্ধিত বাবার জন্ম মায়ের জন্ম
মৃত্যু আগমন নির্গমন সকল পর্বের জন্য চাই ছুটি;
বৎসরের অর্ধেক দিন কাটে আমাদের ছুটিতে।
ছুটি নিয়ে ফিরে যাই কর্মহীনতায় আর সৃষ্টিহীনতায়
গড়ে তুলি অলস আর কর্মবিমুখ প্রজন্ম।
একটি বিষয়ে আমরা পারদর্শী: আমাদের আছে কথা বলার প্রতিভা।
দিনে কথা রাতে কথা অফিসে কথা বাথরুমে কথা ঘুমানোর সময় কথা
জেগে ওঠার সময় কথা হাঁটতে হাঁটতে কথা
দৌড়াতে কথা সাঁতরাতে কথা ইয়ে
করতে করতে কথা
আমাদের কথা থেকে ব্যবসা করে নিচ্ছে ভিনজাতিরা
তারা বিক্রি করছে কথা
বলার মেশিন, স্থাপন করেছে অগণিত কথাকেন্দ্র;
কথা বলার কৃতীত্ব সম্পর্কে
হালনাগাদ করে প্রেরণা দিচ্ছে প্রতিনিয়ত,
এদেশ একটি সম্ভাবনাময় কথা-বলা জাতি!
ছবি: দ্য ডেইলি স্টার, বাংলাদেশ।
No comments:
Post a Comment